পত্রিকা প্রতিনিধি: ফের রাতের অন্ধকারে গুলি চালার ঘটনা ঘটল মেদিনীপুর শহরে। গুলিতে ওই এলাকার এক কিশোর (১৬) জখম হয়। নবম শ্রেণীর ওই ছাত্র’কে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। বটতলাচক এলাকায়, হরিজন প্রাথমিক বিদ্যালয় লাগোয়া (পৌরসভার জল ট্যাংকের কাছে, গো-খানার মাঠ) ছোটো মাঠে এই ঘটনা ঘটেছে রাত্রি সাড়ে ন’টা-দশটা নাগাদ। ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, ওই মাঠে বসে কিছু কিশোর ও যুবক আড্ডা দিচ্ছিল। হঠাৎ গুলির শব্দ শোনা যায়। শুভ বেরা নামে ওই কিশোর কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখে তার ডান হাত রক্তে ভেসে যাচ্ছে! একটু পরে যন্ত্রণা অনুভব করে কাঁধের কাছে। বুঝতে পারে গুলি লেগেছে তার! সাথে সাথেই স্থানীয়রা তাকে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করে।
দুষ্কৃতী তান্ডব নিয়ে, বিরোধী কিংবা শহরবাসীর নানা অভিযোগের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে বটতলাচকের হর্সনদীঘির পাড় লাগোয়া এই এলাকা। তার সাথে সাথে আরো অভিযোগ, বাড়িতে বাড়িতে বন্দুক বা অস্ত্রশস্ত্র পৌঁছে যাচ্ছে! গতকালের ঘটনা তারই ফলশ্রুতি। সামান্য কারণেই গুলি চলার ঘটনা ঘটেছে বলে স্বীকার করছেন এলাকাবাসীও! কোতোয়ালি থানার পুলিশ তদন্তে নেমেছে। রাতেই তল্লাশি চালিয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। ওই কিশোর বিশেষ কারুর নাম না বলতে পারলেও, কারা কারা ওই আড্ডায় ছিল তাদের কিছু জনের নাম জানিয়েছে। সেই সূত্র ধরে, পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলেও এখনো পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি বলে জানা গেছে। বিদায়ী কাউন্সিলর টোটন শাসপিল্লি জানিয়েছেন, “গুলি চলার ঘটনার কথা শুনেছি। পুলিশ তদন্ত করছে। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাই।”
অপরদিকে, যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি বিজেপির পূর্ব মন্ডল সভাপতি দেবাশীষ দাসের বাড়ির পিছনের দিক বলে জানা গেছে। তাঁকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্য করেছেন, “গুলি চলা মানেই আতঙ্ক! বুঝে নিন কেন গুলি চালিয়েছে। আর শহরের আইনশৃঙ্খলা তো কিছু নেই, কি আর বলবো!”
উল্লেখ্য যে, শাসকদলের বিদায়ী কাউন্সিলর এবং বিজেপির মন্ডল সভাপতি’র মধ্যে এলাকায় বিরোধিতা রয়েছে। একটা চাপা উত্তেজনা সব সময় থাকে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী! এর আগেও হর্ষণদীঘি এলাকায় বিভিন্ন ঘটনা বা দুষ্কৃতীমূলক কাজকর্ম ঘটেছে। শহরেও গত এক বছরের মধ্যে এই নিয়ে বেশ কয়েকবার গুলি চলা এবং নিহত বা আহত হওয়ার ঘটনা ঘটলো। সব মিলিয়ে, শাসকদল এবং পুলিশকে নিশানা করতে ছাড়েননি বিজেপির জেলা নেতৃত্ব। জেলা সহ-সভাপতি অরূপ দাস বলেছেন, “শহরের আইন-শৃঙ্খলা বলে কিছু নেই! শহরবাসীর স্বার্থে তবুও আমরা দাবি জানাই, অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার করে উপযুক্ত তদন্ত হোক।”