পত্রিকা প্রতিনিধিঃ নরেন্দ্র মোদীর সভার আগে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর পিতৃদেব সাংসদ শিশির অধিকারীকে নিয়ে জল্পনার পারদ চড়ল রাজনৈতিক মহলে। তবে কি নরেন্দ্র মোদীর কাঁথি সফরেই কি শিশিরবাবু পদ্ম পতাকা হাতে তুলে নেবেন? এই প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজ্য রাজনীতিতে। তবে এখনও তৃণমূলে কি আছেন শিশির অধিকারী? প্রশ্ন তুলে দিলেন কাঁথির বর্ষীয়ান সাংসদ নিজেই। এমনকী আমন্ত্রণ পেলে ২৪ মার্চ কাঁথিতে নরেন্দ্র মোদীর সভাতেও তিনি হাজির থাকবেন বলে জানিয়েছেন শিশিরবাবু।
তিনি বলেন, ছেলে শুভেন্দুর হয়ে প্রচারে নামবেন তিনি। গত ডিসেম্বরে ছেলে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগদান করার পর থেকেই শিশিরবাবুর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। কবে বিজেপিতে যাচ্ছেন তিনি? এই প্রশ্ন উঠেছে তৃণমূলের অন্দরেই। আবার এরই মধ্যে তাঁকে একে একে সরকারি পদ থেকে অপসারণ শুরু হয়েছে। কাঁথিতে অধিকারী আবাসে আনাগোনা বেড়েছে বিজেপির নেতামন্ত্রীদের। এমনকী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলে ছেলে শুভেন্দুর পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘ছেলে যদি প্রচারে ডাকে তো যাবো।’ সঙ্গে নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহত হওয়ার ঘটনায় বলেন, ‘উনি কি পড়েছেন? কোথায় পড়েছেন? ডাক্তার বলেছে কিচ্ছু হয়নি। দুদিন আগে বলছিল লোকে ধাক্কা মেরেছে। প্রতিবাদ হলে এখন বলছে দরজায় লেগেছে। আমারা ঘরে বসে সিনেমা দেখছি।’ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মমতার সহ্যের পরীক্ষা নিচ্ছেন শিশির অধিকারী। এরই মধ্যে মোদীর সভায় হাজির থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন শিশিরবাবু। বললেন, ‘আমি কি তৃণমূলে আছি? যেদিন শুভেন্দু ছেড়ে গিয়েছিল তার ২ দিন পর থেকে পিতৃপুরুষ তুলে গালিগালাজ শুরু করেছে।’ নাম না করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘কলকাতা থেকে এক ভদ্রলোক আসছেন। তার পাশে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে চোর – ডাকাতদের। আর বলছে আমরা না কি মিরজাফর। মেদিনীপুরের লোক জানে, কে ত্যাগী আর কে ভোগী।’
প্রসঙ্গত, আগামী ২৪ মার্চ কাঁথিতে নির্বাচনী জনসভা করার কথা প্রধানমন্ত্রীর। সেই সভায় শিশিরকে আমন্ত্রণ জানাতে ইতিমধ্যেই তাঁর বাড়িতে গিয়েছেন বিজেপি-র সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। শিশির-লকেট সাক্ষাৎ যে মধুর হয়েছে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু সেই সাক্ষাতের ফল হিসেবে তিনি মোদীর সভায় যাবেন কি না, সে প্রশ্নে এখনও ধোঁয়াশা রাখছেন শিশির। বলছেন, “ডাকলে যাব। আমার কোনও আপত্তি নেই।’’ শুভেন্দু বললে তবেই তিনি মোদীর সভায় হাজির হবেন বলে ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়েছেন প্রবীণ রাজনীতিক। তবে মোদীর সভায় কি দেখা যাবে তাঁকে? নন্দীগ্রাম থেকে শুভেন্দু লড়ছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। যে নন্দীগ্রামের ল়ড়াই নিয়ে সরগরম বাংলার বিধানসভা ভোট। বাংলা তো বটেই, গোটা দেশের নজরে রয়েছে নন্দীগ্রাম আসন। যুযুধান মমতা-শুভেন্দুর কারণেই। নন্দীগ্রামে মমতা নিজে কেন প্রার্থী হলেন, তার কারণও নিজের মতো করে ব্যক্ত করেছেন বর্ষীয়ান সাংসদ তথা শুভেন্দুর পিতা। তাঁর কথায়, “উনি (মমতা) তো জাম্প করে এসেছেন! ওঁর কেন্দ্র তো ভবানীপুর বা টালিগঞ্জ। শুভেন্দু দল ছেড়েছে। তাই তাকে উৎখাত করতেই এসেছেন নন্দীগ্রামে।”