ওয়েব ডেস্ক, বিপ্লবী সব্যসাচী পত্রিকা অনলাইন : রবিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়ার পুরএলাকা জুড়ে পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে পোস্টারে ছয়লাপ হয়েছিল গোটা এলাকা। পোস্টারে পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার বামাপদ মাইতিকে নিশানা করে লেখা হয়েছিল “বামাদাকে বলো” স্লোগান। পোস্টারে ইঞ্জিনিয়ার বামাপদ মাইতিকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলে কটাক্ষ করা হয় এবং তাতে উল্লেখ করা হয় পুরসভার চেয়ারম্যান বামাদার উপরেই ভর করে পুরসভা পরিচালিত হয়। রাতের অন্ধকারে দেওয়া এই পোস্টারের নীচে পৌর নাগরিকবৃন্দ বলে উল্লেখ করা হয়।
আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন… প্রতি মুহূর্তের লাইভ খবরের আপডেট পেতে ফলো করুন বিপ্লবী সব্যসাচী নিউজ
ঝটিতি খবর পেতে আমাদের WhatsApp গ্রুপে জয়েন করুন : Click Here
কিন্তু কে বা কারা রাতের অন্ধকারে ওই পোস্টার দিয়েছিল তা এখনও প্রকাশ না হলেও তৃণমূলের এক গোষ্ঠীর দাবি পোস্টার দেওয়ার পিছনে তৃণমূলেরই একশ্রেণির কর্মীরা যুক্ত। এই ঘটনার ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে সেই পোস্টারের পাল্টা পোস্টার পড়লো খড়ার পুর এলাকায়। এবার ইঞ্জিনিয়ার বামাপদ মাইতিকে ক্লিনচিট দিয়ে বামাদার সমর্থনে এই পোস্টার দেওয়া হয়েছে। প্রকাশ্যে দিনের আলোতে এই পোস্টার দিতে দেখা গেল খড়ারের বেশ কিছু ব্যক্তিকে, যদিও তাঁরা শাসক দলের এক গোষ্ঠীর বলে জানা গেছে।
Kharar Municipality
পোস্টার দিতে দেখা যায়, খড়ার পুরসভার বর্তমান চেয়ারম্যান সন্ন্যাসী দোলই এর ছেলে বিলেশ্বর দোলই, সুবীর ভট্টাচার্য, শ্রীমন্ত খাঁ সহ বেশ কিছু তৃণমূল কর্মীকে। পোস্টারে তাঁরা লিখেছেন, *খড়ার পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার বামাপদ মাইতির নামে যারা কুৎসা রটাচ্ছেন তাদের ধিক্কার’। এবং এই পোস্টারে পাল্টা চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলা হয়, ‘সাহস থাকলে বামাদার বিরুদ্ধে কেউ প্রমাণ করে দেখাক তিনি দুর্নীতিগ্রস্ত। তিনি বরাবরই খড়ারের মানুষকে তার দক্ষতা মত পরিষেবা দিয়ে থাকেন।’ পোস্টারে আরও উল্লেখ করা হয়, তাঁর বিরুদ্ধে যাঁরা সরব হয়েছেন তারা কারও কাছে বিকিয়ে আছেন।
পোস্টারের নীচে পৌর নাগরিকবৃন্দ লিখে পোস্টার সাঁটানো হয়। এ বিষয়ে পাল্টা পোস্টার দাতাদের তরফে সাফ জানানো হয়,এলাকার কিছু তৃণমূল কর্মীর ব্যক্তি আক্রোশের জন্যই ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে পোস্টার দিয়েছে। লুকিয়ে দেওয়া পোস্টার দাতারা এক শ্রেণির তৃণমূল নেতাদের মদতপুষ্ট, তাই তারা প্রকাশ্যে এই পাল্টা পোস্টার দিচ্ছেন। যাকে কেন্দ্র করে এই পোস্টার অর্থাৎ পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার বামাপদ মাইতি উভয় পোস্টার কাণ্ড নিয়ে বলেন, ‘কেবল মাত্র ব্যক্তি শত্রুতার কারণেই রাতের অন্ধকারে লুকিয়ে কেউ পোস্টার দিয়েছিল, আমি বরাবরই পুরবাসীকে যথাসম্ভব পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করি।
তবে কোনও বিনিময়ে নয় , দায়িত্ব এবং কর্তব্যের জায়গা থেকেই আমি সঠিকভাবে কাজ করে চলেছি। রাতের অন্ধকারে যে বা যারাই পোস্টার দিয়েছে তাদের নিশ্চয়ই কোথাও ব্যক্তি স্বার্থে আঘাত লেগেছে, তাই তারা পোস্টার দিয়েছেন।তবে সমালোচনার উর্ধ্বে উঠে সরকারি নিয়ম মেনে খড়ারবাসীর জন্য আমি আগেও কাজ করেছি এবং আগামী দিনেও দায়িত্ব পালন করে যাব। উল্লেখ্য,রাতের অন্ধকারে লুকিয়ে পোস্টার এবং সেই পোস্টারের বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তৃণমূলের একাংশ যেভাবে বর্তমান চেয়ারম্যানকে নিয়ে অযোগ্যতার কথা প্রকাশ করতে চেয়েছেন এবং পাল্টা পোস্টারে যেভাবে চেয়ারম্যান ঘনিষ্ঠরা তৃণমূলের অন্য গোষ্ঠীকে নিশানা করে সরব হয়েছেন তাতে খড়ার পুরসভার তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর কোন্দল কার্যত স্পষ্ট।
আরও পড়ুন : বেপরোয়া গতি লরির, গুড়গুড়িপালে মৃত এক
উল্লেখ্য, রাতের অন্ধকারে কারা প্রথম পোস্টার দিয়েছিল সেই বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে পোস্টার দাদাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য,২০২১ এর পৌরভোটের ফল প্রকাশের পর কে হবে এই খড়ার পুরসভার চেয়ারম্যান সেই নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড হয়েছিল এই এলাকাতেই। ঘাটাল ছাড়িয়ে রাজ্যব্যাপী ঝড় উঠেছিল এই পুরসভার চেয়ারম্যানের চেয়ার দখল ঘিরে।
সেই সময় চেয়ারম্যান হিসেবে সন্ন্যাসী দোলই এর নাম ঘোষণা হওয়ার পরেই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের প্রাক- মুহুর্তে দুই গোষ্ঠীর তুমুল দ্বন্দ্ব শুরু হয়। অবশেষে ভোটাভুটির মাধ্যমে সন্ন্যাসীবাবুর পরিবর্তে চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন এলাকার কাউন্সিলর অদ্যুৎ মণ্ডল। তার ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই দলের চাপে অদ্যুতবাবু চেয়ারম্যানের পদ থেকে অব্যাহতি নেন। পরে ফের চেয়ারম্যান হন সন্ন্যাসীবাবুই। সেই ঘটনার পর বর্তমানে ফের খড়ার পুরসভায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর চরম দ্বন্দ্ব কার্যত প্রকাশ্যে।
আরও পড়ুন : সজারুর দেখা মিলল মেদিনীপুরে, নজরদারি বন দপ্তরের
আরও পড়ুন : কুড়মিদের দেওয়ালে রাজনৈতিক প্রচার বন্ধ, বিস্ফোরক মন্তব্য অজিত মাইতির
লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ- https://www.facebook.com/biplabisabyasachi
Kharar Municipality
– Biplabi Sabyasachi Largest Bengali Newspaper