পত্রিকা প্রতিনিধিঃ একুশে বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর থেকেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন গণনা কেন্দ্রে পুনর্গণনার দাবি ওঠে। বিশেষ করে জেলার সবচেয়ে হাইভোল্টেজ কেন্দ্র নন্দীগ্রাম। প্রথমে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে জয়ী এবং দু’ঘণ্টার মধ্যে তার প্রতিপক্ষ শুভেন্দু অধিকারী ঘোষণা করার পর থেকেই হলদিয়া, নন্দীগ্রাম উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তৃণমূল যুব কংগ্রেস সহ সভাপতি আজগর আলী (পল্টু) পুনর্গণনার দাবি নিয়ে হলদিয়া গণনা কেন্দ্রের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ বসে পড়েন।বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলাশাসকের তৎপরতায় হলদিয়া গণনা কেন্দ্রে থেকে স্ট্রং রুমের নথিপত্র স্থানান্তরের সময় নন্দীগ্রামের ইভিএম ভর্তি একটি ট্রাঙ্ক তালা বিহীন অবস্থায় পাওয়া যায়। তাতে ৬-টি ইভিএম ছিল এই ঘটনার শোরগোল পড়ে যায় ।
গননার কারচুপির অভিযোগ তুলে গত ২ মে থেকে হলদিয়া দূর্গা চক ক্ষুদিরাম স্কয়ার মোড়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ চালাচ্ছিল তৃণমূল যুব কংগ্রেস। তাদের দাবি নির্বাচন কমিশন নন্দীগ্রামের ইভিএম বোঝাই কন্টেনার সরিয়ে ফেলতে না পারে সেজন্যই চারদিন রাস্তা আটকে রাখা হয়। তালা বিহীন বাক্স উদ্ধারের ঘটনায় সেটাই প্রমাণ হলো। জেলা প্রশাসক পূর্ণেন্দু কুমার মাঝি বললেন মোট ৬ টি ইভিএম বোঝাই একটি বাক্স তালা বিহীন অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। কেন তালা ছিল না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিন সকালে তৃণমূলের আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা শাসক। ইভিএম গুলি সুরক্ষিত জায়গা রাখার আশ্বাস দেন। এরপর বেলা বারোটা নাগাদ কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় মহকুমার শাসক অবনীত পুনিয়ার উপস্থিতিতে সিল করা কন্টেনার ইভিএম অফিসে স্থায়ী স্ট্রংরুমে নিয়ে যাওয়া হয় ।গণনার পর ইভিএম গুলি ট্রান্ক ভরে সিল করা হয়েছিল। তারপর সেইসব ট্রান্ক গাড়িতে ভরে সিল করে স্কুল চত্বরে রাখা হয়েছিল। এ দিন এডিএম অফিসে কনটেইনার থেকে নামানোর সময় প্রথমে ৩৩ নম্বরের বাক্সের তালা ও সিল বিহীন অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত তৃণমূল জেলা সহ-সভাপতি শেখ আজগর বলেন, নন্দীগ্রামের ইভিএম ভর্তি একটি বাক্সে তালা ছিল না। ঐ বাক্সে গোকুল নগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার১০ টি বুথের ইভিএম ছিল। ইভিএম গুলি সিল অবস্থায় ছিল। কিন্তু তাতে কেবল বিজেপির কাউন্টিং এজেন্টদের সই দেখা যায়। তৃণমূলের এজেন্টের সই নেই। তিনি বললেন গোকুলনগর বুথগুলোতে ভোট গণনার আগে পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৮ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিলেন। এসডিও বললেন গণনার পর ৪৫ দিন পর্যন্ত ইভিএম গুলি স্ট্রং রুম সংরক্ষণ করা হয়। তালাবিহীন একটি বাক্স নজরে এসেছে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে রিটার্নিং অফিসারকে অভিযোগ করা হয়েছে ।নন্দীগ্রামে বিজেপি নেতা মেঘনাথ পাল বলেন গণনার পর ইভিএম রিটার্নিং অফিসারের অধীনে ছিল। ইভিএম ভতি বাক্সে কিভাবে তালা খোলা নাকি বন্ধ ছিল তা জেলা নির্বাচন দপ্তর বলতে পারবে ।আমরা এ দিন থাকতে চেয়েছিলাম ,কিন্তু প্রশাসন নিরাপত্তা ব্যবস্থা না করায় থাকতে পারিনি।