পত্রিকা প্রতিনিধিঃ আসন্ন নির্বাচণের আগে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথির অধিকারী পরিবারে কি আবারও পদ্মফুল ফুটতে চলেছে ? নির্বাচণের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে কাঁথির তৃণমূল কংগ্রেসে সাংসদ শিশির অধিকারীর মন্তব্যে সেই জল্পনা ইতিমধ্যে আরও জোরালো হয়েছে। তবে যিনি তৃণমূলের ‘আক্রমণের’ হাত থেকে পরিবার এবং ছেলে শুভেন্দু ‘প্রতিহত’ করতেও নেমেছেন।
এবিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রাক্তন জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি শিশির অধিকারী বলেন, ‘আমার গোটা পরিবারের উপর যে ধরনের আক্রমণ হয়েছে, তাতে তো ছেলে বাদ নেই। আক্রমণ হলে নিশ্চিত ভাবে আমায় প্রতিহত করতে হবে। অবর্ণনীয় আক্রমণ একেবারে। যা জীবনে কোনও শত্রু আমার বিরুদ্ধে বলতে পারেনি। এমনকী তৎকালীন সিপিআইএম, কংগ্রেসের লোকেরাও এরকম কথা বলতে পারেননি। কিন্তু আমাদের দল নিকৃষ্ট মানের লোকজনকে এখানে পাঠিয়ে আক্রমণ করেছেন। তাছাড়া রাজনীতি কখনও ভোগের নয়, রাজনীতি ত্যাগের রাজনীতি। ত্যাগ থাকলেই রাজনীতি করা হয়।
আমাকে দল থেকে বাদ দিয়েই রাখা হয়েছে। আমি নিজেই আমার অবস্থান জানি না। এখান মাঠে বিজেপি আছে, তাই গেরুয়া শিবির এগিয়ে আছে।যাঁরা নিজেদের উপরতলার নেতা হিসেবে মনে করেন, তাঁরাও আক্রমণ করেছেন। সেই আক্রমণ তো আমায় প্রতিহত করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন , শুভেন্দুকে আক্রমণ করতে কী বাকি রেখেছে! ১১ বার নন্দীগ্রামে আক্রমণ হয়েছে। দলের ভিতরে থাকাকালীন ফালতু সারদা-নারদায় জড়ানো হয়েছে। এটা ফলস! সর্বৈব মিথ্যা।’
উল্লেখ্য , গত ৬ই ফেব্রুয়ারি কাঁথিতে এক জনসভায় এসে শুভেন্দুকে তীব্র কটাক্ষ করেছিলেন রাজ্য যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পূর্ব মেদিনীপুরে বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক মাসখানেক আগে শিশিরের সেই মন্তব্যে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, শিশিরের তৃণমূল-ত্যাগ স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। সম্ভবত ভোটের একেবারে দোরগোড়ায় দলত্যাগ করে ঘাসফুল শিবিরকে আরও বড় ধাক্কা দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কো-অডিনেটর মামুদ হোসেন বলেন , শিশির অধিকারীর পরিবারের উপর আক্রমণ হচ্ছে বলে তিনি তার প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। আর তার ছেলে বিজেপিতে গিয়ে যে কুৎসিত কথায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দোপাধ্যায়’কে ব্যক্তিগত ভাবে আক্রমণ করছেন সেটা তাহলে কিছুই না। তার পরিবারই শুধু পরিবার , মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবার কি পরিবার নয় ! বিজেপির সঙ্গে ২০১৪ সাল থেকে শুভেন্দু অধিকারীর যোগাযোগ রয়েছে তা তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন এবং শিশির বাবুর পরিবারের সম্পদ যদি শুভেন্দু আধিকারী হয় তাহলে পরিবারের সম্পদ উনি রক্ষা করবেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে থাকবেন ! তিনি আরও বলেন, কোনো দিনই উনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছিলেন না, আর আজও নেই। তাছাড়া তিনি যে তার পরিবারের সম্পদের পক্ষে বলবেন, এতে আশ্চার্য হওয়ার কোনো কারণ নেই। তাছাড়া শুভেন্দু অধিকারী’কে নিয়ে তার সপ্ন, তাই তিনি যে বিজেপির পক্ষে আছেন সেটা তিনি প্রকাশ করে ফেলেছেন।
কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী বলেন, মোদিজীর আদর্শে সমৃদ্ধ ভারত গঠনের যে যোগ্য চলছে, তাতে ভারত এগিয়ে গেছে। আর বাংলা’কে সেই রাস্তায় নিয়ে যাওয়ার জন্য সমস্ত ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সবাই ভারতীয় জনতা পার্টির ছাতার নীচে আসছেন। আর যারা পড়ে থাকবেন তারা ওই হার্মাদ ও কাটমানি খোর ছাড়া আর কিছুই নয়। তাছাড়া শিশির বাবুর মতো অভীজ্ঞ মানুষ বাংলাকে সোনার বাংলা করার জন্য বিজেপিতে যদি আসেন তাহলে আশ্চর্য হওয়ার কিছুই নেই। তাছাড়া তার সাংগঠনিক দক্ষতা ও এলাকা সম্পর্কে যে সমস্ত জ্ঞান উনার রয়েছে তা বিজেপি’কে সমৃদ্ধ করবে।