পত্রিকা প্রতিনিধি: ফের করোনা’র মারণ ছোবল শহর মেদিনীপুরে! এবার, কোভিড (১৯) আক্রান্ত হয়ে চলে গেলেন, মেদিনীপুর শহর তথা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অন্যতম প্রসিদ্ধ এবং বর্ষীয়ান আইনজীবী (সিভিল) সমরেন্দ্র নাথ দাস (৭৫)। মেদিনীপুর শহরের প্রখ্যাত এই আইনজীবী সমর দাস নামেই পরিচিত ছিলেন। গত সপ্তাহে কোভিড পজিটিভ হয়ে তিনি লেভেল ফোর শালবনী করোনা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। চারদিনের মাথায় গতকাল (১ সেপ্টেম্বর) রাত্রি ৯ টা ৪৫ নাগাদ তিনি প্রয়াত হন। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, তাঁর শ্বাসকষ্ট সহ বিভিন্ন ধরনের কো-মর্বিডিটি ছিল এবং প্রথম থেকেই অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। যদিও, ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, বিশেষ কোনো শারীরিক অসুবিধা ছিল না, তবে বয়সের কারণে এবং সম্প্রতি জ্বরের উপসর্গ দেখা দেওয়ায় একটু দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন! তাঁর প্রয়াণে মেদিনীপুর শহরের আইনজীবী মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। midnapore, midnapore, medinipur news, biplabi sabyasachi news, latest bengali news, midnapore, coronavirus, covid-19
গতকাল (১ সেপ্টেম্বর) রাত্রি ১০ টা নাগাদ, তাঁর মৃত্যু’র খবর পৌঁছয় পরিবারে। হাসপাতাল সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেলেও, প্রশাসনের নিয়ম মেনে মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়নি। আজ (২ সেপ্টেম্বর) সরকারি ভাবে তাঁর দেহ সৎকার করা হবে বলে জানা গেছে। দাঁতনের মূলনিবাসী প্রখ্যাত আইনজীবী সমরেন্দ্র বাবু দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে মেদিনীপুর শহরের অরবিন্দনগর এলাকায় (স্মৃতিকণা বিদ্যালয়ের পাশে) বাড়ি তৈরি করে বাস করছিলেন তিনি। ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, তাঁর একমাত্র ছেলে মুম্বাইতে কাজ করেন এবং একমাত্র মেয়েরও বিয়ে হয়ে গেছে। এও জানা যায়, করোনা আক্রান্ত হওয়ার আগে অবধি তিনি সাফল্যের সাথে ওকালতি করে গেছেন। মেদিনীপুর জর্জ কোর্টে ছাড়াও বাড়িতেও প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতেন। মূলত, জমিজমা বিষয়ক মামলাতে তিনি সিদ্ধহস্ত ছিলেন বলে জানা গেছে। মেদিনীপুর জর্জ কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা কলকাতা হাইকোর্টের বার কাউন্সিলের সদস্য আইনজীবী শান্তি দত্ত বললেন, “উনি অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং দক্ষ একজন আইনজীবী ছিলেন। দুঃসংবাদ পাওয়ার পরই মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে গেছে। এমন কিছু বয়স হয়নি বা তেমন কোন শারীরিক অসুস্থতা ছিল বলেও জানা নেই। অনেকেই ৮০-৮৫ বছর বয়সেও কোভিড জয় করছেন এবং রীতিমতো ঘুরে বেড়াচ্ছেন। শালবনী থেকেই সম্প্রতি আমার এক অত্যন্ত পরিচিত এবং মেদিনীপুর শহরের নামকরা মানুষ, ৮২ বছর বয়সেও সুস্থ হয়ে ফিরে এলেন।”
আরো পড়ূণ- ড্রোন নিয়ে রহস্য হলদিয়ায়, তদন্তে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক
এদিকে, গত চব্বিশ ঘণ্টায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে প্রায় ১১৪ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে বলে জানা গেছে স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে। মঙ্গলবার প্রায় ৯৫০ টি র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের মধ্যে ১১৪ টি রিপোর্ট পজিটিভ বলে জানা গেছে। তবে, গতকাল এসএসকেএম থেকে আসা সবকটি আরটি-পিসিআর রিপোর্টই ‘নেগেটিভ’ বলে জানা গেছে স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে। জেলায় এই মুহূর্তে (মঙ্গলবার পর্যন্ত) সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৫৪৮। হাসপাতাল আইশোলেশনে আছেন ২৫৬ জন (মোট শয্যা ৪৮০ টি)। বাকি প্রায় ১৩০০ জন উপসর্গহীন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি গৃহ নিভৃতবাসে আছেন বলে জানা গেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে।
লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ- https://www.facebook.com/biplabisabyasachi