পত্রিকা প্রতিনিধিঃ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ময়না থানা এলাকায় হারিয়ে যাওয়া শিশু মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের হাতে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। খুন করা হয়েছিল ওই সাড়ে ৬ বছরের শিশুকন্যাকে বলে জানা যাচ্ছে। তবে বিবাহ বহির্ভুত সম্পর্কের জেরে প্রেমিকের সাহায্য নিয়েই নিজের শিশুকন্যাকে খুন করে থানায় নিখোঁজ অভিযোগ করেন শিশুকন্যার মা। আর চক্রান্তেও শেষ রক্ষা হলো না। অবশেষে পুলিশের জালে অভিযুক্ত মা ও তার প্রেমিক।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৩০শে জানুয়ারি পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না থানার গড়সাফাৎ এলাকার বাসিন্দা জাহানারা বিবি ময়না থানায় শিশুকন্যা নিখোঁজ নিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি পুলিশকে জানান, ওই দিন সন্ধ্যেবেলায় কাজ থেকে বাড়ি ফিরে এসে দেখেন সাড়ে ৬ বছরের শিশুকন্যা বাড়ি থেকে নিখোঁজ। আর সেই মর্মে তিনি ময়না থানায় একটি নিখোঁজ অভিযোগ করেন। এরপর ময়না পুলিশ অভিযোগ পেয়ে বেশ কয়েকদিন তদন্ত চালিয়েও মেয়েটির কোনো খোঁজ পায়নি। এবছর ২২ শে এপ্রিল জাহানারা বিবির বাড়ির পেছনের পুকুর থেকে একটি কঙ্কাল উদ্ধার হয়। এরপর প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করে এটি জাহানারা বিবির নিখোঁজ মেয়ের হতে পারে। পরে সেটিকে ফরেন্সিক টেস্টের জন্য পাঠানো হয় এবং পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করে পুলিশ । এরপর ফের তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে জাহানারা বিবির সাথে নদীয়ার এক যুবকের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে।
পুলিশ সূত্রের দাবি, নদীয়ার নবদ্বীপ থানার মহেশগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা সেখ সাহেবের সাথে মোবাইল ফোনের মিসড কলে প্রথম পরিচয় হয় জাহানারার। তারপর থেকে সেখ সাহেব নামে ওই ব্যাক্তি প্রায়সয় জাহানারা বিবির বাড়িতে আসতেন। পরে এবছরের ১৩ জুলাই পুলিশ কিছু সূত্রের ভিত্তিতে জাহানারা বিবিকে আটক করে জেরা করে। জেরায় সে ও তার প্রেমিক সেখ সাহেব দুজনে মিলে খুন করেছে বলে স্বীকারও করে দাবি পুলিশের। এরপর জাহানারা বিবিকে ওই দিন গ্ৰেফতার করা হয়। আর তার পর সেখ সাহেবের খোঁজ চালায় পুলিশ। পুলিশ গোপন সূত্রে জানতে পারে, সেখ সাহেব কেরালায় রয়েছেন। ঈদ উপলক্ষে মঙ্গলবার বাড়িতে ফেরে সেখ সাহেব। বুধবার নবদ্বীপ থানার পুলিশের সহায়তায় গ্রেপ্তার করা হয় সাহেব’কে। আজ , বৃহস্পতিবার তাকে তমলুক আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।