শুভম সিং:মান্দারমনিঃ দিঘার মোহনার পর এবার মান্দারমনি সমুদ্র সৈকতে দেখা মিলল বিশালাকৃতির পূর্ণবয়স্ক মৃত তিমির।জীবিত উদ্ধার করা না গেলেও,ওই তিমির পরিচয় নিয়ে প্রবল বিস্ময় তৈরি হয়েছে বিশেষজ্ঞ মহলে৷
জানা গিয়েছে,তিমিটি রবিবার রাতের দিকে ভরা জোয়ারের সময় মান্দারমনি সৈকতের ভেসে আসে।এরপর মান্দারমনি সৈকতে সোমবার ভোরে মৎস্যজীবী ও আগত পর্যটকদের নজরে আসে।এই ঘটনার স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি মান্দারমনিতে যারা বেড়াতে গিয়েছেন, তাঁরাও প্রাণীটিকে দেখতে ভিড় জমান সমুদ্র সৈকতে৷ এরপর স্থানীয় মানুষদের কাছ থেকে মৃত তিমির বিচে পড়ে থাকার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান পুলিশ। এরপর পুলিশই খবর দেয় বন দফতরকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন দফতরের কর্মীরা।
স্থানীয় জেলেদের ধারণা গভীর সমুদ্রে অন্তত ১৫দিন আগে এ তিমি মাছটি মারা গেছে।তবে স্থানীয় মানুষজনের ধারণা,ছোটোখাটো হাতির মতো চেহারা সম্পন্ন তিমিটি লম্বায় প্রায় ৩০ ফুট দীর্ঘ হবে।বিশালাকৃতির এই তিমি মাছটি উদ্ধার করে সংরক্ষনের মাধ্যমে পর্যটক ও দর্শনার্থীদের জন্য উম্মুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন পর্যটনমুখী ব্যবসায়ীরা।
মেরিন অ্যাকোরিয়াম এন্ড রিজিওনাল রিসার্চ সেন্টারের জুওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার তৎকালীন অফিসার-ইন-চার্জ তথা গবেষক অনিল মহাপাত্র জানিয়েছিলেন, সেয় হোয়াল প্রজাতির এই তিমি মাছ অত্যন্ত বিরল।এই ধরণের তিমি উদ্ধারের ঘটনা আমাদের দেশের কাছে মস্তবড় সম্পদ। তিনি জানিয়েছিলেন, প্রায় ১ লক্ষ টাকা ব্যায়ে সেই জীবাশ্মের ওপরে জীবানু নাশক বিশেষ কেমিক্যালের রঙের প্রলেপ লাগানোর পর সেটিকে ২০১২ সালের ১৩ জুন থেকে দিঘা মেরিন অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা হয়েছে দর্শকদের জন্য।
রেঞ্জ আধিকারিক প্রবীর কুমার সেন বলেন,দিঘায় আমরা একটি মৃত তিমি ভেসে আসার খবর পেয়েছি।তবে এই সমস্ত তিমি মাছ প্রশান্ত মহাসাগরে থাকে।তাছাড়া বড় বড় জাহাজের ধাক্কায় মৃত্যু হয় এদের।তবে এই তিমিটির মৃত্যু প্রশান্ত মহাসাগরে হয়েছে নাকি বঙ্গোপসাগরে হয়েছে বলা খুবই অসম্ভব।তবে তিমিটি প্রায় ২৫ফুট লম্বা এবং প্রায় ১০ ফুট প্রশস্ত বলে মনে হচ্ছে।তাছাড়া কালো থেকে ধূসর বর্ণের এই তিমির পেটের দিকটা অনেকটা হালকা ক্রিম রংয়ের। এদের মাথাটি খাটো ও চওড়া এবং মাথায় তিনটি সমান্তরাল খাঁজ থাকে।এরা সাধারণত ১২ বছর বয়স থেকে বাচ্চা জন্ম দিতে পারে। তবে এটিকে পর্যটকদের জন্য কোনোভাবে সংরক্ষণ করা যায় কি-না সেটি দেখছি।