৩৩ তম বর্ষ, ৭ সংখ্যা, ১০ আগষ্ট ২০২০, ২৫ শ্রাবণ ১৪২৭
মেদিনীপুর শহরেও করোনার গ্রাস ক্রমশ বেড়ে চলেছে। কখনও কালেক্টরেটের আধিকারিক, কখনও জুনিয়র ডাক্তার, নার্স পুরকর্মী, আদালত কর্মীরা, গৃহস্থ বাড়ির লোক প্রভৃতি বিভিন্ন স্তরের মানুষ সংকরমনের শিকার হচ্ছেন। এই নিয়ে জেলা প্রশাসন, জেলা স্বাস্থ্য দফতর রীতিমতো উদ্বিগ্ন। শহরবাসীর মধ্যেও উদ্বেগ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সংক্রমণের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে কোনও না কোনও সংস্পর্শ যোগ রয়েছে। এখন তো অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরু হয়েছে। ফলে এখন টেস্টের সংখ্যা বাড়বে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরেরও আশঙ্কা তাই-ই। স্বাভাবতই এখন সকলের একটিই প্রশ্ন, যেভাবে সংক্রমণের সংখ্যা এই শহরের বুকেও ক্রমশ বর্ধমান, তাতে সংক্রমিতদের হাসপাতাল্গুলিতে বেড মিলবে তো ? সবাই স্বাস্থ্য সম্মতভাবে কোভিডের চিকিৎসা পাবেন তো ? যদিও রাজ্য সরকারের অভয়বানী কোভিড পজিটিভ ব্যাক্তিদের হাসপ্তালে ভর্তি নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। রাজ্যের মুখ্যসচিব এই আশ্বাস দেওয়ার পাশাপাশি এ-ও বলেছেন, হয়তো রোগী পরিজনদের মনমতো হাসপাতালে সবসময় ভর্তি সম্ভব হবে না, কিন্তু যে হাসপ্তালেই সংক্রমিত্রা ভর্তি হোক না কেন, চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। এছাড়াও শোনা যাচ্ছে করোনা রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি নিয়ে যেসব অভিযোগ ওঠে তার নিরসনে রাজ্য সরকার এবার নিজস্ত কোভিড পেশেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম পোর্টালের মাধ্যেমে ভর্তি সংক্রান্ত সব তথ্য জানানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এর ফলে নির্দিষ্ট পোর্টাল দেখলেই সরকারি-বেসরকারি যে কোনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা রোগীদের হালহকিকত ঘরে বসেই জানতে পারবেন। সুতরাং সরকার তাদের কাজ করছে, আমাদের কাজ সমস্ত রকম স্বাস্থ্য বিধি নিয়ম মতো মেনে চলা। কারণ করোনা প্রতিরোধে এটাই বড় দাওয়াই বিশেষজ্ঞদের। প্রশ্ন হল আমরা কী তা মেনে চলছি সবাই ? ঘরে কি করছি কেউ দেখছে না, কিন্তু বাইরে একী দৃশ্য ? মেদিনীপুর শহরে এত সংক্রমণ বাড়ছে, বাধ্য হয়ে সাপ্তাহিক লকডাউনের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হচ্ছে। কিন্তু রাস্তাঘাটে যারা চলাফেরা করছেন তাঁদের অনেকের মুখে মাস্ক নেই কেন ? কেন বিভিন্ন জায়গায় সামাজিক দুরত্ব বিধির আদ্যশ্রাদ্ধ ঘটানোর প্রবনতা দৃশ্যমান ? কেন অফিস রাস্তাঘাটে, বাজারে দোকানের সামনে থুতু ফেলার মতো ন্যক্কারজনক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে ? কেনই দিনে রাতে শহরের বিভিন্ন চায়ের দোকানে, পান দোকান বা অন্যত্র অবৈধ আড্ডাবাজির চল ? না, এখন মহামারি আইন চালু রয়েছে, কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি ভেঙে এই যে অবৈধ্য কাজকর্ম। এসব বন্ধে না জেলা প্রশাসন, না পুলিশ প্রশাসন কারুরই কোনও নজরদারিই নেই। কেবল লকডাউনের দিন ঘটা করে রাস্তায় টহলদারি, ড্রোন ওড়ানো এসব করে দ্বায় সারলে তার পরিণতি এই দাঁড়াবে। সংক্রমণ বাড়বে ফলে কিছু উচ্ছৃঙ্খল মানুষের বেয়াদপির জন্য শহরের সিংহ ভাগ শৃঙ্খলাপরায়ন মানুষজনকে মহামারির ভয়ে ত্রস্ত হয়েই থাকতে হবে।