৩০ তম বর্ষ, ১৯১ সংখ্যা, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ৪ ফাল্গুন ১৪২৪
মে মাসের গোড়াতেই পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। রাজ্য সরকার থেকে তেমনিই ইঙ্গিত পেয়েছে কমিশন। সেই মতো প্রাথমিক কাজ শুরু করে দিয়েছে তারা। হয়তো আগামী মার্চের প্রথম দিকেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ৩০ থেকে ৪৪ দিনের মধ্যে ভোট করতে হবে। তাই আগামী মে মাসেই পঞ্চায়েত ভোট হতে চলেছে। রাজ্যের শাসক দল তৃণমুল কংগ্রেস তো ইতিমধ্যে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। দলের সর্বময় নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো জেলায় জেলায় প্রশাসনিক সভায় জনগণের কাছে পঞ্চায়েতে তাঁর দলকে উন্নয়নের স্বার্থে, উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে তৃণমূলকে ভোট দেওয়ার আবেদনও জানিয়ে চলেছেন। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা সমাপ্ত হলেই হয়তো মাইকে প্রচার শুরু হয়ে যাবে। কোনও সন্দেহ নেই এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। সামনের বছরই গুরুত্বপূর্ণ লোকসভা নির্বাচন। সেই নির্বাচনের আগে এই পঞ্চায়েত নির্বাচন হল তারই পূর্ব প্রস্তুতি। যাবে বলে ওয়ার্ম আপ। পঞ্চায়েত নির্বাচন মানে গ্রামস্তরে দলের ভিত মজবুত করে তোলা। গ্রামের মানুষের ভোটেই সংখ্যাগোরিষ্ঠ তাই পঞ্চায়েত জেতার গুরুত্বই আলাদা। রাজ্যের ২০ জেলায় ৮২৫টি জেলা পরিষদ আসন, ৩৪১টি পঞ্চায়েত সমিতির আসন আর ৩,৩৫৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৮৪,৭৫১টি আসনের সিংহভাগ যাদের দখলে আসবে আরই যে লোকসভা নির্বাচনে সাফল্যের ক্ষেত্রে অনেকখানি এগিয়ে। কেন না দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনি জন সম্মোহিনী ক্ষমতার দিক থেকে রাজ্যের সব দলের নেতাদের মধ্যে শত যোজন মেইল এগিয়ে । তা না হ’লে দীর্ঘদিন লড়াই সংগ্রাম করে সিপিএম সাম্রাজ্যকে উৎখাত করতে পারতেন না তিনি। তাছাড়া তাঁর বড় প্লাস পয়েন্ট সরকারে আছে এবং রয়েছে সরকারের অনেকরকম জনকল্যাণমূলক প্রকল্প। বিগত ছ-বছরের বেশি সময় ধরে এমনভাবে সরকার চালাচ্ছেন তিনি তাতে তাঁর দলের প্রতি জনসমর্থন বেড়েই চলেছে। বিভিন্ন নির্বাচনে তার প্রমাণও মেলেছে। সুতরাং সেই তুলনায় বিরোধীরা অনেকখানি পিছিয়ে। তাছাড়া পঞ্চায়েতে জিততে হলে চাই গ্রামীন স্তরে বুথভিত্তিক মজবুত সংগঠন। যা তৃণমূলের অনেকখানি সুরক্ষিত। তাই বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেসকে জিততে হলে শাসক দলকে টেক্কা দিতে গেলে দলকে সেই জনসমর্থনের জায়গায় নিয়ে যেতে হবে। পঞ্চায়েত ভোটে জেতার জন্য যদিও সব দলই ঝাপাবে । তবে সবার দৌড় ঝাঁপ শুরু হয়ে যাচ্ছে শীঘ্রই। এর অর্থ বঙ্গবাসী আরও একটি ব্যাটে-বলে ধুন্ধুমার ভোটের লড়াই দেখতে চলেছেন সম্ভবত মে মাসেই।